Posts

দু’জনার ধর্ম দুটি হলেও বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে করা যায়

দু’জনার ধর্ম দুটি হলেও বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে করা যায় অনেক সময় ভিন্ন ধর্মের ছেলে-মেয়েরা তাদের ভালবাসাকে বাস্তবে রুপায়িত করার জন্য একে অপরকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সাবালক-সাবালিকা হিসেবে এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ও আইনগত অধিকার তাদের আছে। সেই অধিকারের ভিত্তিতে দু’জনার ধর্ম দুটি হলেও বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে করা যায়। তখন রাত ৯টা। হঠাৎ আমার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল। বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া জনৈক সুমন পরিচয়ে আমার সাথে দেখা করার ভীষণ ইচ্ছা প্রকাশ করল। আমি আমার চেম্বারে আসার অনুমতি প্রদান করলাম। ১০ মিনিটের মাথায় এক ছেলে ও এক মেয়ে আচমকা চেম্বারে উপস্থিত। বিনয়ী ও মার্জিত পোশাকের অধিকারী ছেলেটি বলল তার এক বন্ধুর মাধ্যমে আমার ঠিকানা পেয়েছে। জানতে চাইলাম আমি কি করতে পারি? আমার এ প্রশ্নে তারা দু’জনেই বেশ বিব্রত অবস্থার মধ্যে লাজুক ভঙ্গিতে বলল, আমরা দু’জনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী কিন্তু আমরা পরস্পর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চাই। প্রথমে তাদের নিরুৎসাহিত করি। পরিবার, সমাজ, ধর্ম বিশ্বাস সবকিছু নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়। তারা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ, বিয়ে হতেই হবে। চেম্বারের আলমারী থেকে ম্যারেজ রেজিষ্টার ব...

কোর্ট ম্যারেজ ও প্রাসঙ্গিক আইন:-)

কোর্ট ম্যারেজ ও প্রাসঙ্গিক আইন:-) কাবিন রেজিষ্ট্রীর পরিবর্তে কোর্টম্যারেজ অধিকতর শক্তিশালী এ ভুল ধারণার ফাঁদে পড়ে অনেক নারী কোর্ট ম্যারেজ করে তাদের দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আইনের ছদ্মাবরণে একশ্রেণীর নোটারী পাবলিক এ অবৈধ কাজে সহায়তা করে চলেছেন। অথচ বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ‘কোর্ট ম্যারেজ’ এর কোন বৈধতা নেই, এর কোন অস্তিত্বও নেই। ৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে কিংবা ১৫০/-টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের কার্যালয়ে গিয়ে হলফনামা করাকে বিয়ে বলে অভিহিত করা হয়। অথচ এ্যাফিডেভিট বা হলফনামা শুধুই একটি ঘোষণাপত্র। আইনানুযায়ী কাবিন রেজিষ্ট্রী সম্পন্ন করেই কেবল ঘোষণার জন্য এফিডেভিট করা যাবে। কিন্তু এ নিয়ম মানা হয় না। মুসলিম বিবাহ ও বিচ্ছেদ বিধি ১৯৭৫ এর ১৯(৩) ধারা অনুযায়ী ‘নিকাহ রেজিষ্ট্রার ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি যদি বিবাহ করান তাহলে সেই ব্যক্তি ১৫ দিনের মধ্যে ওই নিকাহ রেজিষ্ট্রারের নিকট অবহিত করবেন, যার এলাকায় উক্ত বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে।’ মুসলিম বিবাহ ও বিচ্ছেদ আইন ১৯৭৪-এর ধারা ৫ (২) অনুযায়ী বিবাহ রেজিষ্ট্রশন না করার শাস্তি সর্বোচ্চ তিন ...

সকুলারিজমের প্রকৃত তাৎপর্য

সকুলারিজমের প্রকৃত তাৎপর্য  শাহ্ আব্দুল হান্নান বাংলাদেশে সেকুলারিজমের অনুবাদ করা হয় “ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ”। কিন্তু এ অনুবাদ সঠিক নয়। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ সেকুলারিজমের প্রকৃত তাৎপর্য প্রকাশ করে না। এতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এবং জনগন প্রকৃত বিষয়টি বুঝতে পারে না। সেকুলারিজমের প্রকৃত তাৎপর্য রাষ্ট্র ও শিক্ষাকে ধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন করা। সেকুলারিজমের উদ্ভব হয় এনলাইটেনমেন্ট আন্দোলন বা বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে। অস্টাদশ শতাব্দিতে আন্দোলন শুরু হয় ফ্রান্সে এবং ইউরোপের কিছু দেশে । এটা ছিল ধর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলন। তাদের মূলকথা ছিল দু’টি। প্রথমত: ন্যাচারালইজম(ঘধঃঁৎধষরংস) । অর্থাৎ সৃষ্টি প্রাকৃতিক ভাবে হয়েছে। এখানে “স্রষ্টা” বলে কোনো সত্তার ভূমিকা নেই। অর্থাৎ এটি স্রষ্টাকে অস্বীকার করারই শামিল। দ্বিতীয়ত: রেশনেলইজম(জধঃরড়হধষরংস) বা যুক্তিবাদ। অর্থাৎ মানুষ জীবনে চলার ক্ষেত্রে যুক্তির ভিত্তিতে চলবে। স্রষ্টা বা ওহী বা ধর্মগ্রন্থের নির্দেশের ভিত্তিতে নয়। এটিও নাস্তিকতারই নামান্তর। এ দু’টি ছিল এনলাইটেনমেন্ট মুভমেন্টের মূল কথা । এ চিন্তারই প্রায়োগিক বিস্তার ঘটেছে সেকুলারিজম এর নামে। কোথাও এর প্রয়োগ নাস...

পাওয়ার অব অ্যাটর্ণী বা আমমোক্তার নিয়োগ-পদ্ধতি

পাওয়ার অব অ্যাটর্ণী বা আমমোক্তার নিয়োগ-পদ্ধতি যাঁরা সম্পত্তি ভোগ দখল করেন, রণাবেণ করেন, সম্পত্তি কেনা-বেঁচা করে থাকেন তাঁদের জানা উচিৎ পাওয়ার অব অ্যাটর্ণী বা আমমোক্তার নিয়োগ-পদ্ধতি সম্পর্কে। ধরুন, আপনি অঢেল সম্পত্তির মালিক। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। ছেলেমেয়েরাও চাকুরী কিংবা বিবাহ সূত্রে আপনার কাছ থেকে দূরে থাকেন। আগের মতো জমিজমা দেখাশোনা করতে পারছেন না। জায়গাজমি যা আছে আপনার মৃত্যুর পরে তো ছেলেমেয়েদেরই হবে। কিন্তু তারা এখন কাছে নেই। তাই আপনি ঠিক করলেন বিশ্বস্থ কাউকে জায়গাজমি দেখাশোনার দায়িত্ব দেবেন। কিন্তু কীভাবে দায়িত্ব দিতে হবে? আপনাকে এখন যা করতে হবে তা হচ্ছে ওই বিশ্বস্থ ব্যাক্তির উপর পাওয়ার অব অ্যার্টনি বা আমমোক্তারনামা করতে হবে। তা হতে হবে লিখিত। এটি একটি আইনগত দলিল। স্ট্যাম্প আইন অনুযায়ী যে দলিল দিয়ে কোনো ব্যক্তিকে অপর কোনো ব্যক্তির পে হাজির হয়ে মতা প্রদান করা তাকে আমমোক্তারনামা দলিল বলে। যাকে মোক্তার নিয়োগ করা হলো তিনি মূল মালিকের পে সম্পত্তির দান, বিক্রি, হস্তান্তর, রণাবেণ, বন্ধক রাখা, খাজনা প্রদান করে থাকেন। আমমোক্তারনামা দলিলে স্পষ্ট করে লেখা থাকতে হবে যাকে পাওয়ার বা মতা ...

প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিবাহ নিবন্ধন অযোগ্য

Image
প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিবাহ নিবন্ধন অযোগ্য   এক স্ত্রীর বর্তমানে আরেকটি বা একাধিক বিবাহ করাকে বহু বিবাহ বলে। ইসলামী আইনে বলা হয়েছে, কেউ যখন বস্তুগত দিক দিয়ে এবং স্নেহ ভালবাসার দিক দিয়ে প্রত্যেক স্ত্রীর সাথে সমান আচরণ করতে পারবে কেবল মাত্র তখনই সে চারটি পর্যন্ত বিবাহ করতে পারবে। তবে বাস্তবে এটা কখনও সম্ভব নয়। কারণ যে স্বামী নিজের স্ত্রীকে ভালবাসে তার দ্বিতীয় বিবাহ করার ইচ্ছেই হবে না। কাজেই পবিত্র কোরআন শরীফে বহু বিবাহকে অনুমতি দেবার চেয়ে একটি বিবাহ করাই উত্তম বলে উল্লেখ করেছে। আমাদের সমাজে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের আইনগত অধিকার স্বামীদের থাকলেও নারীদের ক্ষেত্রে এ ধরণের বিধান নেই। এখানে উল্লেখ্য যে, একই সঙ্গে স্বামী চারজনের অধিক স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবে না। বহুবিবাহের আর্থসামাজিক বাস্তবতা ইসলামে বহুবিবাহের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে ইসলাম আবির্ভাবের প্রথমদিকে একটি ভিন্ন আর্থসামাজিক ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক বাস্তবতায়। মূলত বিধবা, এতিমদের নিরাপত্তা ও রক্ষার জন্য ইসলামে এ ধরণের প্রতিকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেসময়কার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ওহুদের যুদ্ধে বহু মুসলিম প...

নিজেদের লোকজনের কাছে জমি বিক্রয় না করে বাহিরের লোকের কাছে জমি বিক্রয় করলে মামলার মাধ্যমে বিক্রীত জমি ফেরত নেয়া যায়

Image
নিজেদের লোকজনের কাছে জমি বিক্রয় না করে বাহিরের লোকের কাছে জমি বিক্রয় করলে মামলার মাধ্যমে বিক্রীত জমি ফেরত নেয়া যায় আলম সাহেবের দুই সন্তান, জাহেদুল আলম ও আবিদ আলম। আলম সাহেব মারা যাবার পর যখন জাহেদুল আলম ও আবিদ আলম সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারা করতে যায় তখন থেকেই তাদের মধ্যে মনমালিন্যের শুরু। তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত তাই, তাদের মধ্যে তেমন সুসম্পরক ছিল না। পৈত্রিকসূত্রে তারা বাড়ির জমি ছাড়াও কিছু ফসলি জমি পেয়েছিল। জাহেদুল আলম একজন ব্যাবসায়ী এবং ব্যাবসার বদৌলতে তার অবস্থা অনেক সচ্ছল। অপরদিকে আবিদ আলম তেমন কিছুই করে না। ফলে বিভিন্ন কাজে তাকে ধারদেনা করে চলতে হয়। ধীরে ধীরে আবিদ আলম অনেক দেনাদার হয়ে পরে এবং ঋণদাতাদের ক্রমাগত চাপের ফলে সে সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে তার বাড়ির জমির কিছু অংশ ও কিছু ফসলি জমি বিক্রয় করে দিবে। যেহেতু তার বড়ভাই জাহেদুল আলম এর সাথে তার সম্পর্ক ভাল ছিল না তাই সে তার জমি অনিন্দিতা সরকার এর কাছে বিক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেয়। জাহেদুল আলম যখন জানতে পারে যে ছোটভাই আবিদ আলম তার জমি বিক্রয় করতে ইচ্ছুক তখন সে ঐসব জমিগুলো কিনতে আগ্রহী হয়, কারন সে চায় যে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ত...

কখন আপনি একজন অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন

Image
কখন আপনি একজন অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাবার আগে আমরা ছোট বড় অনেক ধরনের কাজই করে থাকি। এই সব কাজগুলো আমরা একা অথবা কয়েকজন মিলে করে থাকি। এসব কাজের মধ্যে আমরা বৈধ অবৈধ দুই ধরনেরই কাজ করে থাকি। বৈধ কাজগুলো নিয়ে তেমন কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু যে কাজগুলো আমরা অবৈধ বলে জানি তার মধ্যে কিছু কিছু কাজ কি অপরাধ হয়ে যায়? হ্যা, যায়। কারন, এই সব অবৈধ কাজগুলোর মধ্যে যেসব কাজ দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থী হয় সেসব কাজই অপরাধ বলে গন্য হয়। কিন্তু সব অবৈধ কাজই কি অপরাধ? না। কারন, শুধুমাত্র যেসব কাজ দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী সেসব কাজই অপরাধ। কিন্তু সব অবৈধ কাজই অপরাধ নয়। কারন, কারও বিপদে সাহায্য করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং কারও বিপদে সাহায্য না করা নৈতিকতা বিরোধী বা নীতিগতভাবে অবৈধ কিন্তু অপরাধ নয়। আমরা এই বিষয়টা অন্যভাবেও ব্যাখ্যা করতে পারি যেমন, পুর্ণবয়ষ্ক কোন মুসলমান ব্যাক্তি যদি স্ত্রী ব্যাতিত অন্য কোন মহিলার সাথে যৌন কাজে লিপ্ত হয় তবে তা ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ কিন্তু দেশের আইনে অপরাধ নয় (যদি ঐ মহিলার পূর্ণ সমর্থন বা সম্মতি থাকে)। কোন একটি কাজক...