তালাকপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রীর পুনরায় বিয়ে ,স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে ৩ (তিন) উপায়ে ,
তালাকপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রীর পুনরায় বিয়ে
১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশে ৭(৬) ধারা অনুযায়ী তালাকের মাধ্যমে কোন বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে, তালাক হয়া দম্পতি পুনরায় বিয়ে করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে তাদের নতুন করে বিয়ে করতে হবে।
উদাহরণঃ কাশেম তার স্ত্রীকে তালাক দিল। তিন মাস পর কাশেম বুঝতে পারল যে, তালাক দেয়াটা তার ভুল হয়েছে এবং সে এখন হালিমাকে ভালবাসে খবর নিয়ে দেখা গেল হালিমাও কাশেমের কাছে ফিরে আসতে চায়। এখন তারা যদি পুনরায় একসাথে বসবাস করতে চায় তাদের পুনরায় বিয়ে করতে হবে।এখানে বলে রাখা উচিৎ যে, এ ক্ষেত্রে হিল্লা বিয়ের কোন প্রয়োজন নেই। ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশে হিল্লা বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু পরপর তিনবার তালাক হলে তৃতীয়বার স্ত্রীকে আরেকজনের সাথে বিয়ে দিয়ে তারপর বিয়ে-বিচ্ছেদ ঘটিয়ে প্রথম স্বামী বিয়ে করতে পারবে।
স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে ৩ (তিন) উপায়ে তালাক চাইতে পারে :-
১.তালাক-ই-তৌফিজ
২. খুলা
৩. আদালতের মাধ্যমে
তালাক-ই-তৌফিজ: তালাক-ই-তৌফিজ হল কাবিনে স্ত্রীকে তার স্বামীকে তালাক দেয়ার ক্ষমতা দেয়া। কাবিন নামার’ ১৮ নং কলামে এই ক্ষমতা অর্পন করা হয়। এই ক্ষমতার বলে স্ত্রী আদালতের সাহায্য ছাড়া তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে।
এ ক্ষেত্রে স্ত্রী মোহরানা পাবে ও ইদ্দত পালনকালে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবে।
(এর জন্য ১৯৬১ সালের মুসলিম পারবারিক অর্ডিন্যান্সের ৭ ধারায় বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।)।
খুলা: খুলা তালাক হল স্বামী স্ত্রীর আলোচনা স্বাপেক্ষে তালাক। ব্যবস্থা স্ত্রীকেই করতে হবে। প্রয়োজনে কোন চুক্তির মাধ্যমে স্বামীকে তালাকে রাজি করাতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী মোহরানা পাবে ও ইদ্দত পালনকালে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবে।
আদালতের মাধ্যমে: স্ত্রী চাইলে আদালতের মাধ্যমে তালাকের আবেদন করতে পারবে এর জন্য স্ত্রীকে তার কারণ দর্শাতে হবে। অভিযোগ প্রমানের দায়িত্ব স্ত্রীর। স্ত্রী মোহরানা পাবে ও ইদ্দত পালনকালে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবে।
হিন্দু আইনে ভরণপোষণের কিছু বৈশিষ্ট্য:
১। একজন হিন্দুর কোন সম্পত্তি না থাকলেও সে তার নাবালক ছেলে, অবিবাহিত মেয়ে ও বাবা মায়ের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য। দায়াভাগা মতে, বাবা সাবালক ছেলেকে ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য নন।
২। কর্তা যৌথ পরিবারের সকল পুরুষ, তাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের ভরণপোষণে আইনত বাধ্য।
১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশে ৭(৬) ধারা অনুযায়ী তালাকের মাধ্যমে কোন বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে, তালাক হয়া দম্পতি পুনরায় বিয়ে করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে তাদের নতুন করে বিয়ে করতে হবে।
উদাহরণঃ কাশেম তার স্ত্রীকে তালাক দিল। তিন মাস পর কাশেম বুঝতে পারল যে, তালাক দেয়াটা তার ভুল হয়েছে এবং সে এখন হালিমাকে ভালবাসে খবর নিয়ে দেখা গেল হালিমাও কাশেমের কাছে ফিরে আসতে চায়। এখন তারা যদি পুনরায় একসাথে বসবাস করতে চায় তাদের পুনরায় বিয়ে করতে হবে।এখানে বলে রাখা উচিৎ যে, এ ক্ষেত্রে হিল্লা বিয়ের কোন প্রয়োজন নেই। ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশে হিল্লা বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু পরপর তিনবার তালাক হলে তৃতীয়বার স্ত্রীকে আরেকজনের সাথে বিয়ে দিয়ে তারপর বিয়ে-বিচ্ছেদ ঘটিয়ে প্রথম স্বামী বিয়ে করতে পারবে।
স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে ৩ (তিন) উপায়ে তালাক চাইতে পারে :-
১.তালাক-ই-তৌফিজ
২. খুলা
৩. আদালতের মাধ্যমে
তালাক-ই-তৌফিজ: তালাক-ই-তৌফিজ হল কাবিনে স্ত্রীকে তার স্বামীকে তালাক দেয়ার ক্ষমতা দেয়া। কাবিন নামার’ ১৮ নং কলামে এই ক্ষমতা অর্পন করা হয়। এই ক্ষমতার বলে স্ত্রী আদালতের সাহায্য ছাড়া তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে।
এ ক্ষেত্রে স্ত্রী মোহরানা পাবে ও ইদ্দত পালনকালে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবে।
(এর জন্য ১৯৬১ সালের মুসলিম পারবারিক অর্ডিন্যান্সের ৭ ধারায় বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।)।
খুলা: খুলা তালাক হল স্বামী স্ত্রীর আলোচনা স্বাপেক্ষে তালাক। ব্যবস্থা স্ত্রীকেই করতে হবে। প্রয়োজনে কোন চুক্তির মাধ্যমে স্বামীকে তালাকে রাজি করাতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী মোহরানা পাবে ও ইদ্দত পালনকালে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবে।
আদালতের মাধ্যমে: স্ত্রী চাইলে আদালতের মাধ্যমে তালাকের আবেদন করতে পারবে এর জন্য স্ত্রীকে তার কারণ দর্শাতে হবে। অভিযোগ প্রমানের দায়িত্ব স্ত্রীর। স্ত্রী মোহরানা পাবে ও ইদ্দত পালনকালে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবে।
হিন্দু আইনে ভরণপোষণের কিছু বৈশিষ্ট্য:
১। একজন হিন্দুর কোন সম্পত্তি না থাকলেও সে তার নাবালক ছেলে, অবিবাহিত মেয়ে ও বাবা মায়ের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য। দায়াভাগা মতে, বাবা সাবালক ছেলেকে ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য নন।
২। কর্তা যৌথ পরিবারের সকল পুরুষ, তাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের ভরণপোষণে আইনত বাধ্য।
৩। একজন মৃত ব্যক্তি যাদের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য ছিল মৃত ব্যক্তির
উত্তরাধিকারীও মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি হতে তাদের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য।
৪। বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত বাবা তার কন্যা সন্তানের ভরণপোষণ করতে বাধ্য। বাবার অবর্তমানে কন্যার ভরণপোষণ বাবার সম্পত্তি হতেই চলতে থাকবে।
৫। অক্ষমতা ও অযোগ্যতা হেতু কেউ পৈতৃক সম্পত্তির অধিকারে বঞ্চিত থাকলে তাকে ও তার পরিবার বর্গকে অক্ষম ব্যক্তির বাবা ও বাবার অবর্তমানে বাবার উত্তরাধিকারী যথাযোগ্য ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।
৬। হিন্দু আইনে স্ত্রী যদি ধর্মান্তরিত হয় অথবা যদি আইনসঙ্গত কারণ ছাড়াই স্বামীর সাথে স্ত্রীরূপে বসবাসে অনিচ্ছুক হয় তাহলে সে ভরণপোষণ পাবেনা। হিন্দু আইনে যেহেতু বিবাহ বিচ্ছেদ নেই, সেজন্য স্ত্রী যুক্তিসঙ্গত কারণে পৃথক বসবাস করলে ভরণপোষণ পাবেন।
৭। ১৯৪৬ সালের বিবাহিত হিন্দু নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণ আইনানুযায়ী নিম্নোক্ত কারণসমূহের উদ্ভব হলে একজন বিবাহিত হিন্দু নারী স্বামীর কাছ থেকে পৃথকভাবে থেকেও ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী।
(ক) স্বামী যদি এমন কোন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকে যা সে স্ত্রীর কাছ থেকে পায়নি।
(খ) স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করে এবং নিষ্ঠুরতা যদি এমন পর্যায়ের হয় যে, তার জীবনাশংকার ভয় থাকে।
(গ) স্বামী যদি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই তাকে পরিত্যাগ করে।
(ঘ) স্বামী যদি স্ত্রীর বর্তমানে পুনরায় বিয়ে করে।
(ঙ) স্বামী যদি ধর্মান্তরিত হয়।
(চ) স্বামী যদি ঘরেই কোন উপপত্মী রাখে অথবা অভ্যাসগতভাবে উপপত্মীর সাথে বসবাস করে।
কলহ বা মারামারি::
দণ্ডবিধি ধারা ১৫৯ অনুসারে:-
যদি দুই বা ততোধিক ব্যক্তি কোন প্রকাশ্য স্থানে মারামারি করে শান্তিঙ্গ করে,তাহলে সেটা কলহ বা মারামারি বলে কথিত হবে।
৪। বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত বাবা তার কন্যা সন্তানের ভরণপোষণ করতে বাধ্য। বাবার অবর্তমানে কন্যার ভরণপোষণ বাবার সম্পত্তি হতেই চলতে থাকবে।
৫। অক্ষমতা ও অযোগ্যতা হেতু কেউ পৈতৃক সম্পত্তির অধিকারে বঞ্চিত থাকলে তাকে ও তার পরিবার বর্গকে অক্ষম ব্যক্তির বাবা ও বাবার অবর্তমানে বাবার উত্তরাধিকারী যথাযোগ্য ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।
৬। হিন্দু আইনে স্ত্রী যদি ধর্মান্তরিত হয় অথবা যদি আইনসঙ্গত কারণ ছাড়াই স্বামীর সাথে স্ত্রীরূপে বসবাসে অনিচ্ছুক হয় তাহলে সে ভরণপোষণ পাবেনা। হিন্দু আইনে যেহেতু বিবাহ বিচ্ছেদ নেই, সেজন্য স্ত্রী যুক্তিসঙ্গত কারণে পৃথক বসবাস করলে ভরণপোষণ পাবেন।
৭। ১৯৪৬ সালের বিবাহিত হিন্দু নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণ আইনানুযায়ী নিম্নোক্ত কারণসমূহের উদ্ভব হলে একজন বিবাহিত হিন্দু নারী স্বামীর কাছ থেকে পৃথকভাবে থেকেও ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী।
(ক) স্বামী যদি এমন কোন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকে যা সে স্ত্রীর কাছ থেকে পায়নি।
(খ) স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করে এবং নিষ্ঠুরতা যদি এমন পর্যায়ের হয় যে, তার জীবনাশংকার ভয় থাকে।
(গ) স্বামী যদি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই তাকে পরিত্যাগ করে।
(ঘ) স্বামী যদি স্ত্রীর বর্তমানে পুনরায় বিয়ে করে।
(ঙ) স্বামী যদি ধর্মান্তরিত হয়।
(চ) স্বামী যদি ঘরেই কোন উপপত্মী রাখে অথবা অভ্যাসগতভাবে উপপত্মীর সাথে বসবাস করে।
কলহ বা মারামারি::
দণ্ডবিধি ধারা ১৫৯ অনুসারে:-
যদি দুই বা ততোধিক ব্যক্তি কোন প্রকাশ্য স্থানে মারামারি করে শান্তিঙ্গ করে,তাহলে সেটা কলহ বা মারামারি বলে কথিত হবে।
কলহ বা মারামারির শাস্তি
দণ্ডবিধি ধারা ১৬০ অনুসারে:-
কেউ কলহ বা মারামারির অপরাধ সংঘটন করলে তজ্জন্য এক মাস পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে কিংবা একশত টাকা পর্যন্ত যেকোন পরিমান অর্থদণ্ডে কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
*ইভ-টিজিং /যৌন পীড়ন**
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০
(সংশোধনী-২০০৩) ধারা ১০-এ বলা হয়েছে :-
দণ্ডবিধি ধারা ১৬০ অনুসারে:-
কেউ কলহ বা মারামারির অপরাধ সংঘটন করলে তজ্জন্য এক মাস পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে কিংবা একশত টাকা পর্যন্ত যেকোন পরিমান অর্থদণ্ডে কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
*ইভ-টিজিং /যৌন পীড়ন**
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০
(সংশোধনী-২০০৩) ধারা ১০-এ বলা হয়েছে :-
যদি কোন ব্যক্তি অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তাহার
শরীরের যে কোন অঙ্গ বা কোন বস্তু দ্বারা কোন নারী বা শিশুর যৌন অঙ্গ বা
অন্য কোন অঙ্গ স্পর্শ করেন বা কোন নারীর শ্লীলতাহানি করেন তাহা হইলে তাহার
এই কাজ হইবে যৌন পীড়ন এবং তজ্জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক দশ বত্সর কিন্তু
অন্যুন তিন বত্সর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত
অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷
নিরাপত্তা হেফাজত কী ও কেন?
ন্যায়বিচার পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। কিন্তু অনেক সময় অপরাধের বিচার চেয়ে মামলা দায়েরের পর মামলার বাদী নিরাপত্তা হীনতা, ভীতি ও আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করেন। কারণ আসামি পক্ষ বেশির ভাগ সময় সামাজিকভাবে অনেক প্রতাপশালী হয়ে থাকে। এ কারণে আসামিকে প্রাণনাশ এবং গুম হওয়ার আশঙ্কায় রাষ্ট্রীয় আশ্রয়ে থাকতে হয়। যাকে আইনের দৃষ্টিতে নিরাপত্তা হেফাজত বলা হয়। বাংলাদেশে প্রচলিত ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ২০১৩ সালের শিশু আইনে ‘সেফ কাস্টডি’ বা নিরাপত্তা হেফাজতের বিধান উল্লেখ রয়েছে। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
নিরাপত্তা হেফাজত কী?
নিরাপত্তা হেফাজত কোনো কারাগারে নয়, বরং সরকার-প্রত্যায়িত কোনো বিশেষ স্থান কিংবা কোনো বেসরকারি সংস্থা এমনকি কোনো ব্যক্তির হেফাজতও হতে পারে। তবে এটি নির্ধারণ করেন আদালত।
যদি কোনো নারী ও শিশু ফৌজদারি মামলায় যুক্ত থাকে; তখন তারা সামাজিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে। যেমন ধর্ষণের শিকার একজন নারী কিংবা নির্যাতনের শিকার একটি শিশু যখন ধর্ষক কিংবা নির্যাতকের বিরুদ্ধে আদালতে ফৌজদারি মামলা করে, তখন ক্ষতিগ্রস্ত সেই নারী কিংবা শিশুটিকে প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে থাকতে হয়।
নিরাপত্তা হেফাজত আইন
বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ এবং ২০০৩ সালে সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী; ট্রাইব্যুনাল নারী বা শিশুকে কারাগারের বাইরে সরকারি হেফাজতে অন্যত্র বা সরকার অনুমোদিত কোনো সংস্থা বা ব্যক্তি নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার আদেশ দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ওই নারী বা শিশুর মতামত বিবেচনা করতে হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩১ ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন কোনো অপরাধের বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনাল যদি মনে করেন, কোনো নারী বা শিশুকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা প্রয়োজন; তাহলে ট্রাইব্যুনাল উক্ত নারী বা শিশুকে কারাগারের বাইরে ও সরকার কর্তৃক এই উদ্দেশে নির্ধারিত স্থানে সরকারি কর্তৃপক্ষের হেফাজতে বা ট্রাইব্যুনালের বিবেচনায় যথাযথ অন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিতে পারেন।
২০০৩ সালের আগ পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ইচ্ছার কোনো মূল্য দেওয়া হতো না। পরে ২০০৩ সালে আইনটির ২০ ধারায় নতুন উপধারা (৮) যুক্ত করে সংশোধন করা হয়। এ ধারায় বলা হয়- কোনো নারী বা শিশুকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল উক্ত নারী বা শিশুর কল্যাণ ও স্বার্থ রক্ষার্থে তার মতামত গ্রহণ ও বিবেচনা করবেন। সুতরাং, এই সংশোধনী আনার পর থেকে নিরাপত্তা হেফাজতে প্রদানের ব্যাপারে আদালত অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ইচ্ছার মূল্যায়ন করবেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির যদি সরকার কর্তৃক প্রত্যায়িত কোনো স্থানে থাকতে রাজি না হয়, তাহলে তার ইচ্ছা অনুসারেই তাকে কোনো এনজিও কিংবা কোনো আত্মীয়র কাছেও সোপর্দ করা যেতে পারে।
শিশুদের জন্য নিরাপত্তা হেফাজত আইন
১৯৭৪ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনকে সংশোধন করে ২০১৩ সালে শিশু আইন তৈরি করা হয়। এ আইনের অষ্টম অধ্যায়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কিংবা প্রত্যায়িত প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে এবং এসব স্থানে শিশু পরিচর্যায় ন্যূনতম মানদণ্ড কী হবে তা বলা আছে।
নয় বছরের কম বয়সী শিশুদের এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে নয়, বরং বিকল্প পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তার মা-বাবার সঙ্গে তার পুনঃএকত্রীকরণের দিকটি গুরুত্ব দিতে হবে। বিভিন্ন বয়সী শিশুর আবাসনের ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানে পৃথক পৃথক ব্যবস্থা রাখতে হবে। শিশুর জিম্মাদারির দায়িত্ব যাকেই দেওয়া হোক না কেন তার ওপর আদালতের নিয়ন্ত্রণই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
করণীয়
অপরাধীরা নিজেদের অপরাধের বিচার বিঘ্নিত করতে মামলার বাদীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে থাকে। এ অবস্থায় বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলার বাদীকে নিজের পরিচিত ব্যক্তি অথবা রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা ভালো। অন্যথায়, বিচার বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
নিরাপত্তা হেফাজত কী ও কেন?
ন্যায়বিচার পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। কিন্তু অনেক সময় অপরাধের বিচার চেয়ে মামলা দায়েরের পর মামলার বাদী নিরাপত্তা হীনতা, ভীতি ও আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করেন। কারণ আসামি পক্ষ বেশির ভাগ সময় সামাজিকভাবে অনেক প্রতাপশালী হয়ে থাকে। এ কারণে আসামিকে প্রাণনাশ এবং গুম হওয়ার আশঙ্কায় রাষ্ট্রীয় আশ্রয়ে থাকতে হয়। যাকে আইনের দৃষ্টিতে নিরাপত্তা হেফাজত বলা হয়। বাংলাদেশে প্রচলিত ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ২০১৩ সালের শিশু আইনে ‘সেফ কাস্টডি’ বা নিরাপত্তা হেফাজতের বিধান উল্লেখ রয়েছে। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
নিরাপত্তা হেফাজত কী?
নিরাপত্তা হেফাজত কোনো কারাগারে নয়, বরং সরকার-প্রত্যায়িত কোনো বিশেষ স্থান কিংবা কোনো বেসরকারি সংস্থা এমনকি কোনো ব্যক্তির হেফাজতও হতে পারে। তবে এটি নির্ধারণ করেন আদালত।
যদি কোনো নারী ও শিশু ফৌজদারি মামলায় যুক্ত থাকে; তখন তারা সামাজিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে। যেমন ধর্ষণের শিকার একজন নারী কিংবা নির্যাতনের শিকার একটি শিশু যখন ধর্ষক কিংবা নির্যাতকের বিরুদ্ধে আদালতে ফৌজদারি মামলা করে, তখন ক্ষতিগ্রস্ত সেই নারী কিংবা শিশুটিকে প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে থাকতে হয়।
নিরাপত্তা হেফাজত আইন
বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ এবং ২০০৩ সালে সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী; ট্রাইব্যুনাল নারী বা শিশুকে কারাগারের বাইরে সরকারি হেফাজতে অন্যত্র বা সরকার অনুমোদিত কোনো সংস্থা বা ব্যক্তি নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার আদেশ দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ওই নারী বা শিশুর মতামত বিবেচনা করতে হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩১ ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন কোনো অপরাধের বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনাল যদি মনে করেন, কোনো নারী বা শিশুকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা প্রয়োজন; তাহলে ট্রাইব্যুনাল উক্ত নারী বা শিশুকে কারাগারের বাইরে ও সরকার কর্তৃক এই উদ্দেশে নির্ধারিত স্থানে সরকারি কর্তৃপক্ষের হেফাজতে বা ট্রাইব্যুনালের বিবেচনায় যথাযথ অন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিতে পারেন।
২০০৩ সালের আগ পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ইচ্ছার কোনো মূল্য দেওয়া হতো না। পরে ২০০৩ সালে আইনটির ২০ ধারায় নতুন উপধারা (৮) যুক্ত করে সংশোধন করা হয়। এ ধারায় বলা হয়- কোনো নারী বা শিশুকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল উক্ত নারী বা শিশুর কল্যাণ ও স্বার্থ রক্ষার্থে তার মতামত গ্রহণ ও বিবেচনা করবেন। সুতরাং, এই সংশোধনী আনার পর থেকে নিরাপত্তা হেফাজতে প্রদানের ব্যাপারে আদালত অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ইচ্ছার মূল্যায়ন করবেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির যদি সরকার কর্তৃক প্রত্যায়িত কোনো স্থানে থাকতে রাজি না হয়, তাহলে তার ইচ্ছা অনুসারেই তাকে কোনো এনজিও কিংবা কোনো আত্মীয়র কাছেও সোপর্দ করা যেতে পারে।
শিশুদের জন্য নিরাপত্তা হেফাজত আইন
১৯৭৪ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনকে সংশোধন করে ২০১৩ সালে শিশু আইন তৈরি করা হয়। এ আইনের অষ্টম অধ্যায়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কিংবা প্রত্যায়িত প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে এবং এসব স্থানে শিশু পরিচর্যায় ন্যূনতম মানদণ্ড কী হবে তা বলা আছে।
নয় বছরের কম বয়সী শিশুদের এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে নয়, বরং বিকল্প পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তার মা-বাবার সঙ্গে তার পুনঃএকত্রীকরণের দিকটি গুরুত্ব দিতে হবে। বিভিন্ন বয়সী শিশুর আবাসনের ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানে পৃথক পৃথক ব্যবস্থা রাখতে হবে। শিশুর জিম্মাদারির দায়িত্ব যাকেই দেওয়া হোক না কেন তার ওপর আদালতের নিয়ন্ত্রণই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
করণীয়
অপরাধীরা নিজেদের অপরাধের বিচার বিঘ্নিত করতে মামলার বাদীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে থাকে। এ অবস্থায় বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলার বাদীকে নিজের পরিচিত ব্যক্তি অথবা রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা ভালো। অন্যথায়, বিচার বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
Comments
Post a Comment