pena

ধর্ষন করতে চেষ্টা করলে তার শাস্তি কি?
############################################
কাউকে ধর্ষন করতে হবে এমন কোন কথা নেই। ধর্ষন করলে অপরাধি হবে, না করলে হবে না এমন কিছু আইনে বলা হয় নি। বরং আইনে বলা হয়েছে ধর্ষন চেষ্টা করাটাও অপরাধ। যদি কেউ ধর্ষন করার জন্য চেষ্টা করে তাহলে সে অপরাধি হিসাবে গণ্য হবে। এজন্য আইনে শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাহলে জেনে নিন আইনগত ভাবে ধর্ষণ চেষ্টার শাস্তি কি?
যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে তাহলে উক্ত ব্যক্তি অপরাধি হিসাবে গন্য হবে।
অপরাধের শাস্তি
সর্বোচ্চ ১০ বছর কিন্তু ৫ বছরের কম নয় সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হবে এবং এর অতিরিক্ত হিসাবে অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হবে।
ধারা - ৯। উপধারা - (৪) (খ)
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন - ২০০০।

যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো, আঘাত করা ইত্যাদির জন্য আইনে বর্ণিত শাস্তি
##########################################

যদি কোন নারীর স্বামী বা স্বামীর পিতা অর্থাৎ উক্ত নারীর শ্বশুর , স্বামীর মাতা অর্থাৎ উক্ত নারীর শ্বশুড়ি, স্বামীর অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি যৌতুকের জন্য উক্ত নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন [ কিংবা উক্ত নারীকে মারাত্মক জখম (grievous hurt) করেন বা সাধারণ জখম (simple hurt) করেন] তাহা হইলে উক্ত নারীর স্বামী, স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা ব্যক্তি-
(ক) মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদণ্ডে বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে উক্ত দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন;
(খ) মারাত্মক জখম (grievous hurt) করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অনধিক ১২ (বার) বৎসর পর্যন্ত কিন্তু ০৫ (পাঁচ) বৎসরের কম নয় সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন;
(গ) সাধারণ জখম (simple hurt) করার জন্য অনধিক ০৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত কিন্তু ০১ (এক) বৎসরের কম নয় সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷]
ধারা -১১। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন।

ভ্রান্ত ধারনার বশবর্তী হয়ে কোন অপরাধ করলে সেটা অপরাধ হিসেবে গন্য হবেনা।
.

‪#‎উদাহরণঃ‬ রফিক রাত্রি বেলা আবুলের ঘরে প্রবেশ করে। এখানে তার প্রবেশ করার আইনসম্মত অধিকার আছে। আবুল সরল বিশ্বাসে রফিককে চোর ভেবে আক্রমন করে। এই ক্ষেত্রে আবুল রফিককে ভ্রান্ত ধারণায় আক্রমন করে কোন অপরাধ করেনি।
(দণ্ডবিধি ধারা ৯৮)

যৌতুক কাকে বলে?
যৌতুক অর্থ হচ্ছে - কোন বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা সরাসরিভাবে বিবাহের সাথে জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি দ্বারা উক্ত বিবাহের সময় বা তারপূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির অর্থাৎ বহাল থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসাবে বিবাহের কনে পক্ষের নিকট দাবীকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ; অথবা
কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা সরাসরিভাবে বিবাহের সাথে জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্ত বিবাহের সময় বা তারপূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির অর্থাৎ বহাল থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসাবে প্রদত্ত বা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ।


ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুর অঙ্গহানি করার শাস্তি
===========================================
যদি কোন ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তি বা অঙ্গ- প্রতঙ্গ বিক্রির উদ্দেশ্যে কোন শিশুর হাত, পা, চক্ষু, বা অন্য কোন অঙ্গ বিনষ্ট করে বা অন্য কোন ভাবে বিকলাঙ্গ বা বিকৃত করে তাহলে সে ব্যক্তি অপরাধী হিসাবে গণ্য হবে।
==========================
এই অপরাধের শাস্তি
==========================
মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হবে এবং এর অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবে।
=========================
ধারা- ১২, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০।

**নির্ধারিত গতির চেয়ে অধিক বা দ্রুত গতিতে গাড়ি চালনার শাস্তি**
মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১৪২ ধারা অনুযায়ী__
প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ দিন কারাদণ্ড বা ৩০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ড। পরবর্তীতে একই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের কার্যকারিতা ১ মাসের জন্য স্থগিত।

ভালবাসার মানুষটিকে বিয়ে করতে চান কিন্তু বাধা হয়ে দাড়িয়েছে ধর্ম, কেউই ধর্ম পরিবর্তনে রাজী নন।
এখন উপায়?
চিন্তার কোন কারণ নেই, উপায় আছে smile emoticon
১৮৭২ সালের বিশেষ বিবাহ আইনে ধর্ম পরিবর্তন না করেও আইন সম্মত ভাবে বিয়ে সম্ভব।
এই আইনের অধীনে বিয়ে করতে পারবে :-
১. যারা কোনো ধর্মের অনুসারী নয়।
২. ভিন্ন ধর্মের দু’জন ব্যক্তি যারা ধর্ম ত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে।
৩. আইনে উল্লেখিত আট ধর্ম ছাড়া অন্য যে কোনো ধর্মের ব্যক্তিরা ধর্ম ত্যগ না করেই এই বিয়ের সুবিধা নিতে পারে। যেমনঃ ব্রাহ্মরা।
৪. হিন্দু ধর্মের ভিন্ন বর্ণের দু’জন ব্যক্তি ধর্ম ত্যাগ না করেই বিশেষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।
৫. ভিন্ন ধর্মের দু’জন ব্যক্তি যদি তারা হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন এই চার ধর্মের যেকোনো দুটির অনুসারী হয় তবে ধর্ম ত্যাগের ঘোষণা ছাড়াই তা করতে পারে।
কিভাবে বিয়ে করবেন:
এর জন্য নোটারি পাবলিক কর্তৃক একটি হলফনামায় পাত্রপাত্রীর সাক্ষর করতে হবে। হলফনামায় অবশ্যই বিশেষ বিবাহের কথা উল্লেখ করতে হবে। এরপর বিশেষ বিবাহ রেজিস্ট্রারের কাছ নির্ধারিত ফরম নিয়ে তা পূরণ করে বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে। বিয়েতে তিন জন সাক্ষি লাগবে।
তবে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের ১৪ দিন আগে বর বা কনের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রারের নিকট একটি নোটিশ পাঠাতে হবে।

প্রতিটি এবরশন মানে একটি হৃদস্পন্দন থেমে যাওয়া, একটি হাসি থেমে যাওয়া, দুটি হাত, যা কখনো কাউকে স্পর্শ করতে পারবেনা, দুটি চোখ,যা পৃথিবীর আলো দেখবেনা,
এবরশন/গর্ভপাত একটি অমানবিক ও জঘন্যতম কাজ। ভ্রূণহত্যা মানব হত্যারই সমতুল্য। শুধু সচেতন হলেই তা এড়ানো সম্ভব। বিয়ের পূর্বে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক থেকে বা স্বামী স্ত্রীর অপরিকল্পিত মিলন থেকে বিরত থাকলে এবরশন/ গর্ভপাত করানোর প্রয়োজন হয়না। মনে রাখবেন একমাত্র মায়ের মৃত্যু ঝুকি এড়াতে এবরশন করানো যায় এবং সেটা যৌক্তিক।।
আসুন জানি বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে যৌক্তিক কারণ ব্যতীত এবরশন/গর্ভপাত ঘটানোর কি শাস্তি রয়েছে:-
গর্ভপাত ঘটানো (দণ্ডবিধি ধারা ৩১২)
যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভবতী স্ত্রীলোকের গর্ভপাত ঘটায়, এবং সেই গর্ভপাত সরল বিশ্বাসে উক্ত স্ত্রীলোকের জীবন বাঁচাবার উদ্দেশ্যে না হয়ে থাকে তাহলে সেই ব্যক্তি তিন বৎসর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে কিংবা অর্থদণ্ডে, কিংবা এতদুভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবে; এবং স্ত্রীলোকটি যদি আসন্ন প্রসবা হয়, তাহলে সেই ব্যক্তি সাত বৎসর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে, এবং তাকে অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত করা হবে।
‪#‎ব্যাখ্যা‬: যে স্ত্রীলোক নিজেই নিজের গর্ভপাত ঘটায় সেই স্ত্রীলোকও এই ধারার অন্তর্ভুক্ত।
স্ত্রীলোকের সম্মতি ব্যতিরেক গর্ভপাত ঘটানো (দণ্ডবিধি ধারা ৩১৩)
যদি কোন ব্যক্তি পূর্ববর্তী ধারায় বর্ণিত অপরাধটি সংশ্লিষ্ট স্ত্রীলোকের সম্মিতি ব্যতিরেক অনুষ্ঠান করে- স্ত্রীলোকটি আসন্ন প্রসব হোক বা না হোক- তাহলে সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন বা দশ বৎসর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে, এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
মহান আল্লাহ তায়ালাও পবিত্র কোরআনে যৌক্তিক কারণ ব্যাতীত গর্ভপাত করানো'তে নিষেধ করেছেন,
চলুন জেনে নেই মহান আল্লাহ তায়ালা কি বলেছেনঃ
“তুমি একনিষ্ঠভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহ্‌র প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ্‌র সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।“– কোরআন (৩০:৩০)
“ আপনি বলুনঃ এস, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তা এই যে, আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো না, পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রের কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না; কিন্তু ন্যায়ভাবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বুঝ।”
—আল-কোরআন (৬:১৫১)
“দারিদ্রের তরে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরন দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই তাদেরকে হত্যা করা মারাত্মক অপরাধ”
—আল-কোরআন (১৭:৩৩)

ইয়াকুব মেমন: ভুল মানুষকেই কি ফাঁসি দেয়া হলো?
১৯৯৩ সালের ১২ই মার্চ। ১৩ টা বিস্ফোরণ। কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে শেষ ২৫৭টা প্রাণ। ছারখার শ’য়ে শ’য়ে পরিবার! দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বিচারের প্রতীক্ষা। অবশেষে ফাঁসি হলো ইয়াকুব মেমনের। কে এই মেমন?
ইংরেজী মাধ্যম থেকে স্কুল এবং কলেজ শেষ করে বাণিজ্য বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে তিনি চাটার্ড একাউনটেন্ট হন। তার একাউন্টেন্সি ফার্মটি খুব দ্রুতই সফলতা পেয়েছিলো এবং ১৯৯২ সালে তিনি সেরা চাটার্ড একাউনটেন্টও নির্বাচিত হন তিনি।
মুস্তাক মেমেন ওরফে টাইগার। এই টাইগার মেমেনেরই ভাই ইয়াকুব মেমন। টাইগারের মাধ্যমে ভারতে ব্যবসা চালাতেন দাউদ ইব্রাহিম। বিস্ফোরণের আগের দিন দুবাই পালিয়ে যান টাইগার। অভিযোগ রয়েছে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জবাবে দাউদের সঙ্গে মুম্বই বিস্ফোরণের ছক কষেছিলেন টাইগার। কিন্তু ফাঁসি কার্যকর হলো তার ভাই ইয়াকুব মেমনের।
পরস্পর বিপরীতধর্মী ছিলো এ দু’ ভাইয়। তাদের মতবিরোধের আরেকটি কারন ছিলো, টাইগার মেমন তার স্ত্রী সাবানার প্রতি ছিলেন খুবই নির্দয়, এবং তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কও ছিলো। এরকমই কোন এক টানাপোড়েনে টাইগার মেমন, তার স্ত্রী ও সন্তানদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে হয়। অবশ্য মুম্বাই হামলার আনুমানিক বছরখানেক আগে তারা সবাই আবারো পরিবারে সাথে যোগ দিয়েছিলেন।
দিল্লি পুলিশ স্বীকার করেছে যে, ত্রিশ বছর বয়সেই ইয়াকুব মেমন মুম্বাই পুলিশের কাছে সবচয়ে স্মার্ট এবং সহযোগীতাপূর্ণ আসামি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছে। ১৯৯৩ সালে ভারতের মুম্বাইতে সিরিজ বোমা হামলার অন্যতম আসামি ছিলেন মেমন ভাইদের মধ্যে তৃতীয়জন, এই ইয়াকুব মেমন।
১২ মার্চ, ১৯৯৩ সালে যখন মুম্বাই হামলা হয়, তখন মেমন পরিবার দুবাইতে ছিলো। ভারত সরকার তাদেরকে ফেরত দেয়ার জন্য দুবাই সরকারকে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু দুবাই সরকার মেমন পরিবারের উপস্থিতির কথা অস্বীকার করে।
পরে ভারত সরকার জানতে পারে যে, তারা পাকিস্তানের করাচিতে আছে। মেমন পরিবারের প্রত্যেককেই পাকিস্তানের পাসপোর্ট ছিলো। ভারত জাতিসংঘের কাছে তাকে ফেরত পাওয়ার আর্জি জানায়। ভারতের অব্যাহত পীড়াপীড়িতে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলে মেমনকে ভারতের কাছে ফেরত দিতে পাকিস্তানের প্রতি আহবান জানায়।
এমন অবস্থায় তাদেরকে ব্যাংককের একটি বাংলোতে গৃহবন্দী করে রাখা হয় এবং সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যাবস্থা করা হয়। কিন্তু এতে আপত্তি জানালে এবং করাচিতে ফিরতে চাইলে তারা আবার করাচিতে ফেরত আসে। এরপর পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই যান ইয়াকুব মেমন। কিন্তু সার্বক্ষনিক তিনি পাক সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকতেন। এ অবস্থায় ইয়াকুব বুঝলেন, তিনি এবং তার পরিবার আর কোনদিন স্বাধীন জীবন যাপন করতে পারবেন না।
তার সামনে খোলা ছিলো মূলত দুটি পথ। এক, পাকিস্তানে ফেরত গিয়ে একরকম গৃহবন্দী অবস্থায় জীবন পার করা। আর দুই, ভারতে ফিরে গিয়ে বিচারের মুখোমুখি হওয়া এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করা। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, ভারত সরকারকে এটা বোঝাবেন যে, মেমন পরিবারের বাকী সব সদস্য নির্দোষ। ১৯৯৪ সালে দিল্লি এক স্টেশন থেকে আটক করা হয় ইয়াকুবকে। তবে ইয়াকুব দাবি করেছেন, তিনি নিজেই আতসমর্পন করেছেন। পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় তিনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে নানাভাবে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন। এজন্য ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার এর সাবেক এক কর্মকর্তা এক চিঠিতে ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির বিপক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। ২০০৭ সালে লিখা এ চিঠিটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়।
মেমনের ফাঁসি কার্যকরের পর পক্ষে-বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন ভারতের মানুষ। বলিউড সুপারস্টার সালমান খান টুইটারে ইয়াকুবের সমর্থনে মুখ খুলে তাকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। পাশাপাশি, ইয়াকুবের ভাই টাইগার মেমনকে ফাঁসিতে ঝোলানোরও দাবি জানান বলিউডের এই অভিনেতা। সালমানের টুইট, টাইগারকে ফাঁসিতে ঝোলাও। ভাইকে নয়, তাকে প্যারেড করানো হোক। পরে অবশ্য সমালোচনার মুখে তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন।
‘বিভিন্ন হামলায় জামিন পেয়ে যাওয়া হিন্দু নেতাদের মতো ইয়াকুব মেমনকে লাউঞ্জে বসে থাকতে হবে না, বরং ইয়াকুব মেমন বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে’- আমান খান নামে এক ভারতীয় নাগরিকের এমন ফেসবুক পোস্ট ধরে ভারতের নন্দিত গায়ক কবীর সুমন লেখেন, ভারতের জনগণের ওপর নানান সময়ে যেসব আক্রমণ হয়েছে তার প্রতিটিতেই মুসলমানদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। এই হত্যালীলার অপর আরেকজন অভিযুক্ত বিস্ফোরণের মূলচক্রী দাউদ ইব্রাহিমের ডান হাত ছোটা শাকিল ইয়াকুবের মৃত্যুদ-কে দেখছেন ‘আইনি হত্যা’ হিসেবে। শাকিল বলেন, ভারত সরকার কী বার্তা দিতে চাইল? একজন মানুষকে তার ভাইয়ের অপরাধের সাজা ভুগতে হল। ইয়াকুব মেমনের মৃত্যুর পরিণাম ভারতকে ভুগতে হবে, এভাবেই বদলার হুমকি দেন ছোটা শাকিল। বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন ইয়াকুব। মৃত্যুর আগে ইয়াকুব স্বীকার করেছিল মুম্বই হামলায় জড়িত ছিল তার ভাই। বলেছিল, ভাইয়ের পাপের বোঝা বইতে হচ্ছে আমাকে।




Comments

Popular posts from this blog

শোন এরেস্ট (Shown Arrest) কাকে বলে ? ..শিশুদের গ্রেপ্তারে হাতকড়া পরানো যাবেনা

জেনে নিন ভায়োলেশন কেইস সম্পর্কে

** 'হেবা' ও 'হেবা-বিল-এওয়াজ' কী? **