আইন মেনে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায় ,না মানলে শাস্তি

আইন মেনে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায় ,না
মানলে শাস্তি
............................................................
............
কোনো কারণে জীবনের চক্রে আবার
বিয়ে করার প্রয়োজন হলো। কিন্তু
চাইলেই কি আপনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে
পারবেন? উত্তর হচ্ছে, আইন অনুযায়ী এক
স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় আরেকটি
বিয়ে করা যাবে না। তবে কারও যদি স্ত্রী
বর্তমান থাকাকালে আরেকটি বিয়ে করার
প্রয়োজন হয়, তাহলে তাঁকে তাঁর বর্তমান
স্ত্রী যে এলাকায় বসবাস করছেন, সেই
এলাকার সালিসি পরিষদের কাছে
আরেকটি বিয়ে করার অনুমতি চেয়ে আবেদন
করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে প্রস্তাবিত
বিয়ের কারণ এবং এই বিয়েতে বর্তমান
স্ত্রীর সম্মতি রয়েছে কি না, তা উল্লেখ
করতে হবে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যান বা পৌরসভার মেয়র দুই
পক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে সালিসি পরিষদ
গঠন করে থাকেন।সালিসি পরিষদের
লিখিত অনুমতি নিয়েই কেবল দ্বিতীয়
বিয়ে করা যাবে। সালিসি পরিষদে যদি
বর্তমান স্ত্রী অনুমতি প্রদান না করেন,
তাহলে কোনোভাবেই দ্বিতীয় বিয়ে করা
যাবে না। আবার সালিসি পরিষদকেও
নির্দিষ্ট কিছু বিষয় বিবেচনা করে
দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি প্রদান করতে হবে।
যেমন: ১. বর্তমান স্ত্রীর বন্ধ্যত্ব, ২.
শারীরিক মারাত্মক দুর্বলতা, ৩.
দাম্পত্যজীবন সম্পর্কিত শারীরিক
অযোগ্যতা, ৪. মানসিকভাবে অসুস্থতা
ইত্যাদি। কোনো কারণে যদি স্ত্রী পৃথক
থাকতে চান বা আলাদা বসবাস করেন সে
ক্ষেত্রেও স্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে। তবে
কোনো কারণে যদি স্ত্রী ঘরে আর না
ফেরেন এবং দ্বিতীয়বার বিয়ে করার
অনুমতিও প্রদান না করেন, তাহলে
আইনসম্মতভাবে তালাক কার্যকর করার পরই
পুনরায় বিয়ে করতে হবে।
শাস্তি
যে ব্যক্তি সালিসি পরিষদের অনুমতি
ছাড়া আরেকটি বিয়ে করেন, তিনি ১৯৬১
সালের মুসলিম পারিবারিক আইন
অধ্যাদেশের ৬ (৫) ধারায় শাস্তিযোগ্য
অপরাধ করবেন। আদালতে দোষী প্রমাণিত
হলে দোষী ব্যক্তিকে এক বছর পর্যন্ত বিনা
শ্রম কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত
জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। এ
জন্য প্রথম স্ত্রীকে স্বামীর বিরুদ্ধে
উপযুক্ত প্রমাণ দেখিয়ে ফৌজদারি
আদালতে মামলা করতে হবে। আবার
দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে যদি আগের বিয়ের
কথা গোপন করেন তাহলেও দণ্ডবিধি
অনুযায়ী কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
স্ত্রীকে অধিকারবঞ্চিত করা যাবে না
স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলেও প্রথম স্ত্রী
সম্পূর্ণ মোহরানার টাকা দাবি করতে
পারেন। স্বামী সম্পূর্ণ মোহরানার টাকা
পরিশোধ করতে আইনত বাধ্য। বর্তমান
স্ত্রীকে কাবিননামায় তালাকের ক্ষমতা
দেওয়া হলে সরাসরি নতুবা আদালতে
মামলা করে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারেন।
দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে প্রথম স্ত্রী
আলাদা বসবাস করেও ভরণপোষণ পাবেন।
কোনোভাবেই স্বামীর ভবিষ্যৎ
উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে
বঞ্চিত হবেন না। আবার দ্বিতীয় বিয়ে
করে ফেললে দ্বিতীয় স্ত্রীকেও তাঁর
মোহরানাসহ যাবতীয় আইনি অধিকার
থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। উভয় পক্ষের
সন্তানসন্ততিকেও প্রাপ্য ভরণপোষণ দিতে
হবে। সব সন্তানই ভবিষ্যতে সমানভাবে
উত্তরাধিকারীর সব অধিকার লাভ করবে।
তবে মনে রাখতে হবে, প্রথম স্ত্রীর অনুমতি
ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করলে দ্বিতীয়
বিয়েটি অবৈধ হয়ে যাবে না। কিন্তু
স্বামীকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

Comments

Popular posts from this blog

শোন এরেস্ট (Shown Arrest) কাকে বলে ? ..শিশুদের গ্রেপ্তারে হাতকড়া পরানো যাবেনা

জেনে নিন ভায়োলেশন কেইস সম্পর্কে

Detention (ডিটেনশন) কি ? একজন ব্যক্তিকে কতদিন বিনা বিচারে আটক রাখা যায় ?ইম্পয়াউনড কেস -Impound Case ঃ