ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ

ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ

গাড়ি চালানো জানলেই যে কেউ চাইলেই গাড়ি রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হতে পারবেন না। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হতে হলে প্রয়োজন বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। আসুন জেনে নিই ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহের পদ্ধতি সম্পর্কে।

আবেদন প্রক্রিয়া:
প্রথমেই বিআরটিএ কার্যালয় কিংবা এর ওয়েবসাইটwww.brta.gov.bd থেকে আবেদনপত্র ও মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ফরম ডাউনলোড করে নিতে হবে। ওয়েবসাইটের হোম পেজের শুরুতেই ডাউনলোড লিংকটি দেওয়া রয়েছে। আবেদনপত্রটি প্রার্থীকে নিজ হাতে পূরণ করতে হয় এবং মেডিকেল সার্টিফিকেট ফরমটি একজন রেজিস্ট্যার্ড চিকিৎসক দ্বারা পূরণ করাতে হয়। আবেদনপত্রের সাথে মোট চার কপি ছবি জমা দিতে হয় (৩ কপি স্ট্যাম্প, ১ কপি পাসপোর্ট)। আবেদনপত্রটি বি.আর.টি.এর অফিসে জমা দিতে হয়। নির্ধারিত ফি জমা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট পোস্ট অফিসে। আবেদন পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এর যথার্থতা বিবেচনা করে সাধারণত সাত দিনের মধ্যে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়। এর মেয়াদ থাকে তিন মাস। কর্তৃপক্ষের দেওয়া সময় অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। উত্তীর্ণ হলে তবেই পাওয়া যায় চাহিদামতো ড্রাইভিং লাইসেন্স। এ ক্ষেত্রে বয়স হবে সর্বনিম্ন ১৮, এমন একটি শর্তও আছে।

ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে:
ট্রাক, লরি, বাসের মতো ভারী যানবাহনের লাইসেন্স পেতে হলে আগে হালকা মোটরযানের লাইসেন্স থাকতে হয়। হালকা মোটরযানের লাইসেন্স পাওয়ার তিন বছর পার না হলে ভারী যানবাহনের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যায় না।

লাইসেন্স ফি:
বিআরটিএর লাইসেন্স ফি বিআরটিএ নির্ধারিত পোস্ট অফিসে জমা দিতে হয়। শুধু প্রাইভেটকারের জন্য শিক্ষানবিশ ফি ২৩০ টাকা। আর প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের জন্য ৩৪৫ টাকা।
অপেশাদার লাইসেন্স ফি শুধু প্রাইভেটকারের জন্য দুই হাজার ৩০০ টাকা এবং হালকা বাহন ও মোটরসাইকেলের জন্য দুই হাজার ৪০০ টাকা।

আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ:
যারা বিদেশে গাড়ি চালাতে চান তাদের সংগ্রহ করতে হয় আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট। এজন্য প্রার্থীর বাংলাদেশের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হয়। আন্তর্জাতিক লাইসেন্সের জন্য চেয়্যারম্যান, অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন, ৩/বি আউটার সার্কুলার রোড, মগবাজার, ঢাকা থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা দিয়ে ফরম সংগ্রহ করতে হয়। ফরমের সঙ্গে পাসপোর্টের ফটোকপি, তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি জমা দিতে হয়। এরপর অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়্যারম্যান এবং বিআরটিএর সহকারী পরিচালকের (ইঞ্জি.) যৌথ স্বাক্ষরে আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট ইস্যু হয়।

নবায়ন:অপেশাদার লাইসেন্স ১০ বছর এবং পেশাদার লাইসেন্স পাঁচ বছর পর পর নবায়ন করাতে হয়।

লাইসেন্স নবায়ন ফি:
বিআরটিএ কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্সের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। মেয়াদান্তে নির্ধারিত পরিমাণ ফি জমা দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সধারী গাড়ি রাস্তায় বের হলে জরিমানা কবলে পড়তে হয়। এ ঝামেলার হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে যথাসময়ে লাইসেন্স নবায়ন করাই ভালো।
অপেশাদার লাইসেন্সের নবায়নের জন্য পরিশোধ করতে হয় ২৩০০ টাকা, যার মেয়াদ থাকবে ১০ বছর।
আর পেশাদার লাইসেন্স নবায়নের জন্য পরিশোধ করতে হয় এক হাজার ৪৩৮ টাকা এবং যার মেয়াদ থাকবে পাঁচ বছর পর্যন্ত।  মেয়াদ উত্তীর্ণের পর লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে বিলম্ব ফি বাবদ প্রতি ১ বছর = ১০০ টাকা জরিমানা প্রদান করতে হয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
  • স্ট্যাম্প সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি
  • পাসপোর্ট সাইজের এক কপি রঙিন ছবি
  • লাইসেন্সের দুটি ফটোকপি
  • লাইসেন্সের লেমিনেটিং কপি

Comments

Popular posts from this blog

শোন এরেস্ট (Shown Arrest) কাকে বলে ? ..শিশুদের গ্রেপ্তারে হাতকড়া পরানো যাবেনা

জেনে নিন ভায়োলেশন কেইস সম্পর্কে

Detention (ডিটেনশন) কি ? একজন ব্যক্তিকে কতদিন বিনা বিচারে আটক রাখা যায় ?ইম্পয়াউনড কেস -Impound Case ঃ