যেভাবে বদলে যাচ্ছে ধর্মীয় অনুশাসন
উইলফোর্ড উডরাফ মরমোন চার্চের চতুর্থ সভাপতি হন ১৮৮৯ সালে। সভাপতি থাকা অবস্থায় তাকে একজন নবী হিসেবে দেখা হত যে কিনা সরাসরি যিশু খ্রিস্টের কাছ থেকে প্রজ্ঞা ও উপদেশ গ্রহণ করতে পারতেন এবং সত্যিই তার উপদেশের দরকার ছিল কারণ তার গীর্জা সংকটে ছিল। প্রায় ৪০ বছর ধরে মরমোন বহুগামীতার বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের সাথে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত থাকে। আর এ ব্যাপারে পুরুষ বিশ্বাসীরা খুবই উৎসাহিত ছিল। সরকার বলে যে এটা বেআইনি এবং এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় বিশ্বাসের কিছুই করার নেই। একাধিক স্ত্রী রাখার দায়ে সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পরিকল্পনায় লিপ্ত থেকে উডরাফ এবং তার মতো অন্যান্যরা একটি অনিশ্চিত জীবন যাপন করতেন। ১৮৯০ সালে সরকার চার্চের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এসবের একটি সমাপ্তি টানার উদ্যোগ নেয়।
এসময়ই উডরাফ বলেন, যিশু খ্রিস্ট স্বপ্নযোগে তাকে বহুগামিতার চর্চা বন্ধ করা না হলে মরমোন চার্চের ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হতে পারে তা দেখিয়ে দিয়েছেন, এবং এতে তিনি ভালো কিছু দেখেননি। যদিও তিনি বহুবিবাহের বিষয়টিকে একেবারেই অস্বীকার করেননি, তবে তা নিষিদ্ধ করে একটি ইশতেহার প্রকাশ করেন তিনি। ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আমেরিকান ধর্মের ইতিহাসের অধ্যাপক ক্যাথলিন ফ্লেক, যিনি নিজেও একজন মরমোন তার মতে, যদি মনে হয় যে সমস্যাটির খুব সহজেই সমাধান হয়েছিল তবে তা ঠিক নয়। তিনি বলেন, সামাজিক, ব্যক্তিগত এবং ধর্মতাত্ত্বিক দিক থেকে এটা খুবই জটিল একটা বিষয় ছিল। এ পরিবর্তন সমগ্র গীর্জার সংগঠনকেই অস্থিতিশীল করে তোলে এবং এর মধ্য দিয়েই মরমোনবাদের মৌলিক নীতিমালার একটি গভীর প্রতিফলন ঘটে।
‘ইতিহাসে দেখা গেছে, যে ধর্ম পরিবর্তিত হতে চায়নি সে মরে গেছে’, যোগ করেন ফ্লেক। কিন্তু যেসব ধর্মের কোনো জীবন্ত নবী নেই তাদের কী অবস্থা; তারা কীভাবে পরিবর্তিত হয়? যেমন মুসলমানদের কথাই ধরা যাক, তাদের শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.), যিনি প্রায় ১৪০০ বছর আগে মারা গেছেন। এরপর আইন বিশেষজ্ঞ উলামারাই ইসলামি শরীয়া আইনের ব্যাপারে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃত হয় যা এ ধর্মের দুটি মৌলিক দলিল কোরআন ও সুন্নাহর ওপর ভিত্তি করে গঠিত। এখন আরব সমাজের বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভুত আইন-কানুন যা সপ্তম শতকের আরবদের জীবন যাপনের ক্ষেত্রেই শুধু প্রয়োগযোগ্য ছিল বর্তমান একুশ শতকের দুনিয়ায় তার প্রয়োগের সম্ভাব্যতা একটি কঠিন সমস্যাই হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এটাও কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন দেশের উলামারা ভিন্ন ভিন্ন রায় দেন এবং তারা প্রায়ই তাদের মত পরিবর্তন করেন।
এক শতক আগেও একটি রেডিও বা লাউডস্পিকার ব্যবহার হারাম বা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আজ অনেক ধর্মপরায়ণ মুসলিমেরই নিজস্ব রেডিও, টিভি এবং এমনকি ইউটিউব চ্যানেলও আছে। তেমনিভাবে, ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের সময় উলামারা জন্মনিয়ন্ত্রণকে হারাম ঘোষণা করলেও বর্তমান ইরানে কনডম ব্যাবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে; এমনকি রাষ্ট্রীয় সহায়তায় কনডম উৎপাদনে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। ইরানের বিদ্যালয়গুলোতে বিয়ের আগেই ছেলে-মেয়েদেরকে পরিবার পরিকল্পনার পাঠ দেয়া হচ্ছে। ডেলাওয়্যার বিশ্ব বিদ্যালয়ের মুকতেদার খান বলেন, ‘আগে ধারণা করা হত যে, পশ্চিম থেকে আসা যে কোনো কিছুই ইসলামের জন্য অবমাননাকর।’ দৈনন্দিন জীবন যাপনের পশ্চিমা রীতি-নীতির সাথে মুসলমানদের শিক্ষা-দীক্ষার প্রায়ই একটা টানাপোড়েন চলতো। এ ক্ষেত্রে মুসলিম পুরুষদের জন্য একটা বড় সমস্যার বিষয় হচ্ছে পেশাব করার নিয়ম নিয়ে।
মুসলমানদের নিয়ম হচ্ছে বসে বসে পেশাব করা। খান ব্যাখ্যা করে বলেন, এটাই মুসলমানদের নামাজের জন্য পোশাক পবিত্র রাখার সবচেয়ে ভালো উপায়। তবে পশ্চিমে এটা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে- পশ্চিমা বাড়িঘরের কাঠামো। খান বলেন, পশ্চিমা বাড়ি-ঘরের কাঠামোয় মেয়েদের জন্য আলাদা কোনো ব্যাবস্থা নেই। এ ক্ষেত্রে যদি শুধু মুসলিমদের উপস্থিতিতে একটি পার্টির আয়োজন করা হয় তখন যদি কোনো নারী আলাদা ব্যাবস্থা দাবি করে তাহলে পরিস্থিতি খুবই জটিল আকার ধারণ করে। এর ফলে তিনি তার সন্তানদের তিন-চারটি জন্মদিন করতে পারেননি বলে জানান খান। বহুমুখী সাংস্কৃতিক সমাজের মুসলমানরা প্রায়ই তাদের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থের পুনর্ব্যাখ্যার আর্জি জানায়, বলেন খান। ধর্মতত্ত্বিকরাও এ আর্জির প্রেক্ষিতে কোরআনের আক্ষরিক ব্যাখ্যা অথবা এর গভীর মর্মার্থ উদ্ধারের যে কোনো একটিকে বেছে নেন।
তবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তারিক রামাদানের মতে, এ ক্ষেত্রে প্রধান নীতি হওয়া উচিৎ প্রথমেই ‘মূলনীতি’ যা অপরিবর্তনীয় এবং পরে বিশেষ দেশ-কাল-পাত্র ভেদে যে ‘মডেল’ বা ‘আদর্শ এ নমুনা’ দাঁড়ায় তার মধ্যে একটা ভেদ রেখা টেনে নেয়া। এ দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বিশেষ দেশ-কাল-পাত্রের প্রেক্ষিতে কোরআন থেকে আমাদের টানা সিদ্ধান্তগুলোর পরিবর্তন করা কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয়, বরং এটা এটা বাধ্যতামূলক। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোঝাপড়ার মধ্যে বিবর্তন ছাড়া ইসলামের বাণীগুলোর পূর্ণ অনুশীলন সব সময় সম্ভব না-ও হতে পারে।’ সুতরাং যখন স্ত্রীদের প্রহার করা জায়েয বলে কোরআনের কোনো আয়াত হাজির করা হবে, তখন এর জবাব দেয়ার জন্য ‘সর্বোত্তম উদাহরণ হতে পারে যে ইসলামের রাসুল (সা.) নিজে কোনোদিন তার কোনো স্ত্রীকে প্রহার করেননি’, যোগ করেন রামাদান।
ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব’র অধ্যাপক অরভিন্দ শার্মা একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে দেখান যে কীভাবে কোন বিষয়ে একটি ধর্মের মৌলনীতি ঠিক রেখেও দেশ-কাল-পাত্র ভেদে গড়ে ওঠা নীতি বা আদর্শের পরিবর্তন সাধন করা সম্ভব হয়। তার ঘটনাটি মহাত্মা গান্ধীর হিন্দু ধর্মের একটি মূলনীতি ‘কর্ম’র ধারণার ব্যাখ্যার মুহূর্তটির ওপর কেন্দ্র করে গঠিত। ‘কর্ম’ ধারণা মতে, প্রত্যেকেই পরকালে তার মন্দ কাজের জন্য শাস্তি পাবে আর ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত হবে। শার্মা বলেন, ‘কর্ম’র ধারণা সনাতন হিন্দু ধর্মে জাত-পাত ভেদের ন্যায্যতা উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হত। যেমন বলা হতো- কেউ যদি নিচু শ্রেণীতে জন্মায় তাহলে বুঝতে হবে যে পূর্ব জন্মে সে কোনো অপরাধ করেছিল। যার ফলে এ জন্মে সে নিচু জাতে জন্মেছে। সুতরাং তার কর্মের ফল হিসেবেই তাকে তার এ নিচু সামজিক মর্যাদা মেনে নিতে হবে।’
শার্মা বলেন, গান্ধী দেখান যে, হিন্দুদের সব বর্ণই ব্রিটিশরা অস্পৃশ্য মনে করে। কারণ তারা তাদের বাড়ি ঘর এবং ক্লাবের দরজায় লিখে রাখে যে, ‘কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ।’ ‘গান্ধীর দাবি এ ক্ষেত্রেতো কর্ম’র ধারণা কাজ করছে না। ভারতীয়রা যেমন জন্ম পরিচয়ের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে উঁচু-নিচু ভেদ করে তেমনি করে ব্রিটিশরাও জন্ম পরিচয়ের ভিত্তিতেই ইউরোপীয় এবং ভারতীয়দের মধ্যে উঁচু-নিচু ভেদ করছে।’ তবে তাই বলে গান্ধী কর্ম’র ধারণাকে পরিহার করার কথা বলেননি। তিনি বরং এর নতুন ব্যাখ্যা দিয়ে এর ওপর ভিত্তি করে মানুষকে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে এবং ভালো কাজে উৎসাহিত করার কথা বলেন। ইহুদীদের একটি ধর্মগ্রন্থ তালমুদের একটি বিখ্যাত গল্পে দেখা যায়, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে তাদের নিজেদের মতো করেই ধর্মীয় আইন-কানুনের ব্যাখ্যা করবে তার ইঙ্গিত ওই গল্পে রয়েছে।
ওই গল্পে, মুসা একদিন সিনাই পর্বতে যান আল্লার কাছ থেকে ইহুদীদের আরেকটি ধর্মগ্রন্থ তৌরাতের বাণী লাভ করতে। এ সময় মুসা দেখতে পান যে আল্লাহ্ এর হরফগুলো ছোট ছোট মুকুট দিয়ে অলঙ্কৃত করে দিয়েছেন। নিউইয়র্কের ইহুদী ধর্মতাত্ত্বিক বিদ্যালয়ের এক রাবাই বার্ট ভিজোটজস্কি বলেন, ‘মুসা ছিল খুবই বিনয়ী লোক এবং সে বললো যে, ঠিক আছে হে খোদা, তুমি জান- আমি সত্যি সত্যিই এ বাণী যেভাবে আছে ঠিক সেভাবেই লোকের কাছে নিয়ে যাবো।’ ‘তখন আল্লাহ বললেন, না, এটা করা যাবে না। কারণ ভবিষ্যতে আকিভা নামে এমন এক রাবাই আসবে যে এই পবিত্র বাণীগুলোর হরফ থেকে নয় বরং এর অলঙ্কার সজ্জা থেকেই নতুন আইন বানাবে।’ এরপর আল্লাহ যখন মুসাকে ভবিষ্যতে আকিভার দীক্ষা দানের একটি চিত্র দেখান তখন মুসা হতভম্ব হয়ে যান। কারণ আকিভা তার শ্রোতাদের উদ্দেশে কি বলছিল মুসা কিছুই বুঝতে পারছিলেন না।
‘তালমুদের গণ্ডির ভেতরেই গড়ে ওঠা রাবাইদের আইন-কানুন এবং জ্ঞানের ভাণ্ডার দেখে এটাই প্রমাণিত হয় যে জ্ঞানের জগতে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয় তার মানে এই নয় যে তা আল্লাহর বাণী থেকে আলাদা কিছু হয়ে যায় এবং এতে আল্লাহর বাণীরও ক্ষতি হয়ে যায়’ যোগ করেন তিনি। পরিবর্তিত হওয়ার জন্য ধর্মের ওপর চাপ সৃষ্টি করা মানুষের জ্ঞানের একটি শাখা হচ্ছে বিজ্ঞান। এ ক্ষেত্রে কোপার্নিকাস বিপ্লবের একটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। কোপার্নিকাস যখন চার্চের বিপরীতে দেখান যে, সূর্য পৃথীবির চারদিকে নয় বরং পৃথীবিই সূর্যের চারদিকে ঘুরছে তখন চার্চের সাথে একটা সংঘাত বেধে যায়। চার্চ এর আগে গ্যালিলিওকে এ ধরণের মত পোষণ করায় ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে তার জীবনের শেষ দশটি বছর তাকে গৃহবন্দী করে রাখে। গ্যালিলিও তার পদার্থ বিজ্ঞান এবং জোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণায় এ সংক্রান্ত ধর্মীয় বাণীর ব্যাখ্যায় একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গীও প্রদান করেন।
তিনি ধর্মীয় বাণীর বিরোধিতা না করে বরং একে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেন। জর্জ কোয়েন নামে একজন জেসুইট পাদ্রী, যিনি নিজে ভ্যাটিকানের মান মন্দির ২৮ বছর ধরে পরিচালনা করেন তিনি বলেন, ‘গ্যলিলিও মূলত বলেন- এ সংক্রান্ত ধর্মগ্রন্থের বাণীতে স্বর্গ কীভাবে চলে তার নির্দেশনা নয়, বরং আমাদেরকে কীভাবে স্বর্গে আরোহন করতে হবে তার নির্দেশনা দেয়া আছে।’ ক্যাথলিক গির্জা এখন স্বীকার করে নিয়েছে যে, গ্যালিলিওই ঠিক ছিল এবং ১৯৯২ সালে পোপ জন পল গ্যালিলিওর বিরুদ্ধে আনা ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু বিজ্ঞান গির্জার সামনে এখনও কঠিন সব প্রশ্ন তুলেই যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে কোয়েন বলেন, ‘জেনেটিক্স’র পুরো গন্ডি, আণবিক জীব বিজ্ঞান এবং বিবর্তন প্রভৃতি চার্চের সামনে কঠিন সব চ্যালেঞ্জই বটে।’
‘গ্যালিলিওর ভুত কি বারবারই কথা বলার জন্য ফিরে আসছে? হ্যাঁ, আসছে। আমার প্রিয় চার্চ! গ্যালিলিওর সময় তুমি যা করেছ তা হল তুমি বিজ্ঞানের কথা শোননি এবং এখনও তুমি একই কাজ করছে।’ কোয়েনের মতে, বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রশিক্ষিত বিশ্বাসীদেরকে চার্চের মোকাবেলায় নামতে হবে এবং চার্চের শিক্ষা-দীক্ষার সাথে বিজ্ঞানের আবিষ্কার এবং মানবজাতির জন্য তাদের প্রস্তাবনার একটি সমন্বয়ও সাধন করতে হবে। কী বিশ্বাস করতে হবে এবং কাকে বিশ্বাস করতে হবে তা চূড়ান্ত বিচারে কোনো ধর্মগুরুর ওপর নয়, বরং যে বিশ্বাস করে তার উপরই নির্ভর করে। এ হিস্টোরি অফ গড এবং ধর্মীয় বিষয়ে আরো ২০ টিরও বেশি গ্রন্থের লেখক ক্যারেন আর্মস্ট্রং বলেন, ‘চূড়ান্ত বিচারে নিজেরাই চিন্তা করার জন্য আমাদেরকে সৃষ্টিশীল প্রচেষ্টাটি করতে হবে এবং নিজেদের জন্যই হতবুদ্ধিকর প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজে বের করতে হবে।’
কীভাবে জীবন যাপন করতে হবে তার উত্তর কখনই শুধু কিতাবের মধ্যেই পাওয়া যাবে না। যেমনি করে গাড়ি চালানোর যোগ্যতা গাড়ির নির্দেশিকার মধ্যে পাওয়া সম্ভব নয়, তেমনি করে শুধু কিতাবের মধ্যেই জীবন পরিচালনার দিক নির্দেশনা পাওয়া সম্ভব নয়, যোগ করেন আর্মস্ট্রং। তবে তিনি এটাও স্বীকার করেছেন যে, এটা মেনে নেয়াটা তাদের জন্য খুবই কঠিন হবে যারা নিয়ত পরিবর্তনশীল এ দুনিয়ায় তাদের ধর্মের কাছে অনড় কিছু প্রত্যাশা করে এবং সব প্রশ্নের রেডিমেড উত্তর পাওয়া যায় এমন কোনো পাত্রের খোঁজ করেন। আর্মস্ট্রং বলেন, ‘লোকে প্রায়ই মনে করে যে, ধর্ম বুঝি খুবই সহজ ব্যাপার। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এর জন্যও এক কঠোর বুদ্ধিবৃত্তিক, আত্মিক এবং কল্পনাশ্রয়ী শ্রম ও প্রচেষ্টার দরকার হয়।’
Comments
Post a Comment