ড্রাইভিং লাইসেন্স করার উপায়:

 ড্রাইভিং লাইসেন্স করার উপায়: নিয়মকানুন মেনে গাড়ি চালানোর জন্য দরকার প্রশিক্ষণ ও কিছু দরকারি কাগজপত্র। ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে থাকলে চালক রাস্তার ট্রাফিক সংকেতগুলো সম্পর্কে জানেন ও মানেন বলে ধরে নেওয়া হয়। কারণ লাইসেন্স দেওয়ারআগে বিআরটিএ তিনস্তরের পরীক্ষার মাধ্যমে লাইসেন্স প্রদান করে।একবার লাইসেন্স করলে তা দিয়ে সারাজীবন গাড়ি চালানো যায় না। নির্দিষ্ট সময় পর পর নবায়ন করতে হয়। চালকের সঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে পুলিশ আইন অনুযায়ী মামলা করতে পারে।ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে: ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রথমেবিআরটিএ’র ওয়েবসাইটথেকে লার্নার বা শিক্ষানবিস ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।বিআরটিএ অফিসেও বিনামূল্যে লার্নার ফর্ম দেওয়া হয়। এটি পূরণ করে লার্নার অর্থাৎ শিক্ষানবিস লাইসেন্সের জন্য নির্দিষ্ট ব্যাংকে সরকার নির্ধারিত ফি জমা দিতে হয়।খরচাপাতি:মোটরসাইকেল ও গাড়ির লাইসেন্স ফিএকই। তবে মোটরসাইকেলের কোনো পেশাদার লাইসেন্স দেওয়া হয় না।শিক্ষানবিস ফি:*.একটি যানের জন্য ৩৪৫ টাকা(১৫% ভ্যাটসহ)।*.দু’টি (গাড়ি ও মোটরসাইকেল) যানের জন্য ৫১৮ টাকা (১৫% ভ্যাটসহ)।*.লার্নার নবায়ন ফি ৮৭ টাকা (১৫% ভ্যাটসহ)।*.শিক্ষানবিস থেকে পূর্ণমেয়াদের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য নির্ধারিত পরীক্ষা দিতে হয়। এর জন্যও রয়েছে আলাদা ফি।*.অপেশাদার লাইসেন্স ফি : ২,৩০০ টাকা (১৫% ভ্যাটসহ)।*.পেশাদার লাইসেন্স ফি : ১,৪৩৮ টাকা (১৫% ভ্যাটসহ)।অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া:প্রথমে লার্নার বা, শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হবে।আবেদনকারীর স্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানা বিআরটিএ’র যে সার্কেলের আওতাভূক্ত তাকে সেই সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। সার্কেল অফিস কর্তৃপক্ষ তাকে একটি শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করে, যা দিয়ে আবেদনকারী ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন।প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তাকে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেটের তত্ত্ববধানে পরীক্ষা নেওয়া হয়। ঢাকা জেলা সার্কেলের পরীক্ষা দিতে হলে যেতে হবে কেরানীগঞ্জেরইকুরিয়ায়।নির্ধারিত কেন্দ্রে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্টে অংশগ্রহণ করতে হয়। ট্রাফিক আইন, ট্রাফিক সংকেত সম্পর্কিত বিষয়ে সংক্ষিপ্ত উত্তর লিখতে হয়। ফিল্ড টেস্টে সামনে-পেছনে, ডানে-বাঁয়ে ও পরীক্ষকের নির্দেশনা মতো গাড়ি চালিয়ে দেখাতে হয়।এ তিনটি ধাপে পাশ করলে লাইসেন্স দেওয়া হয়।শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে যেসব কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে:১. নির্ধারিত ফরমে আবেদন।২. রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।৩. ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি।৪. নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদ।৫. সদ্য তোলা ৩ কপি স্ট্যাম্প ও ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।তিনটি পরীক্ষায় পাশ করার পর নির্ধারিত ফর্মে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি দিয়ে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে।নির্ধারিত দিনে গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙুলের ছাপ) দেওয়ার জন্য উপস্থিত হতে হয়। এসব প্রক্রিয়া শেষে বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ইস্যু করে।স্মার্ট কার্ড পাওয়ার তারিখ এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়াহয়।পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ করতে হলে আরও কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয়।পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স:*.পেশাদার হালকা (মোটরযানের ওজন ২৫০০ কেজি’র নিচে) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২০ বছর হতে হবে।*.পেশাদার মধ্যম (মোটরযানের ওজন ২৫০০ থেকে ৬৫০০ কেজি) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৩ বছর হতে হবে।*.পেশাদার ভারী (মোটরযানের ওজন ৬৫০০ কেজির বেশি) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৬ বছর হতে হবে।এছাড়া পেশাদার ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য প্রার্থীকে প্রথমে হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে। এরন্যূনতম তিন বছর পর তিনি পেশাদার মিডিয়াম ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।আর মিডিয়াম ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার কমপক্ষে তিন বছর পর ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয়।লাইসেন্সের মেয়াদ:অপেশাদার হলে ১০ বছর, পেশাদার হলে ৫ বছর।ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন:লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলে তা নবায়ন করতে হয়। বিআরটিএ-তে নির্ধারিত ফি দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়।নবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:১. নির্ধারিত ফরমে আবেদন।২. রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সাটিফিকেট।৩. ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর সত্যায়িত ফটোকপি।৪. নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদ।৫. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর ক্ষেত্রে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন।৬. সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট ও ১ কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি।প্রয়োজনে আবেদনের মাধ্যমে লাইসেন্স এক এলাকার লাইসেন্স অন্য এলাকায় স্থানান্তর করা যায়।অপেশাদার হলে:প্রথমে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএ’র নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র ও সংযুক্ত কাগজপত্র ঠিকভাবে পাওয়া গেলে একইদিনে গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙুলের ছাপ) গ্রহণ করা হয়। স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস-এরমাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।পেশাদার হলে:পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে পুনরায় ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর গ্রাহকেরবায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে উপস্থিত হতে হয়।

Comments

Popular posts from this blog

জেনে নিন ভায়োলেশন কেইস সম্পর্কে

** 'হেবা' ও 'হেবা-বিল-এওয়াজ' কী? **

শোন এরেস্ট (Shown Arrest) কাকে বলে ? ..শিশুদের গ্রেপ্তারে হাতকড়া পরানো যাবেনা