আপনি কি আপনার সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে জমি কিনতে চাচ্ছেন,তবে চোখ বুলিয়ে নিন নিন্মলিখিত বিষয়ে :

আপনি কি আপনার সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে জমি কিনতে চাচ্ছেন,তবে চোখ বুলিয়ে নিন নিন্মলিখিত বিষয়ে :
জমি কেনার পূর্বে সতর্কতাঃ
কথায় আছে “পয়সা দিয়ে ঝগড়া-
ফ্যাসাদ কিনতে চায় কে?” তাই
ভূমি ক্রয়ের সময় সম্ভাব্য সকল
যুক্তিসঙ্গত সতর্কতা অবলম্বন ও
অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে।
জমি ক্রয়ের
পূর্বে ক্রেতাকে যে প্রধান
বিষয়গুলোর প্রতি সতর্ক
হতে হবে তা হলো:
১/ প্রথমেই প্রস্তাবিত
জমিটি সরেজমিনে গিয়ে দেখতে হবে
তাহলেই জমিটির প্রকৃত রূপ
বুঝা যাবে যে তা আদৌ ভালো জমি
নালা-পুকুর!
২/ সংলগ্ন জমির মালিক
বা এলাকাবাসীর নিকট হতে জমির
বিষয়ে খোঁজখবর নিতে হবে। এরাই
আপনাকে জমির
বিষয়ে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য
দিতে পারবে।
৩/ বিক্রেতার কাছ থেকে তার
মালিকানার প্রমাণ স্বরূপ দলিল
দস্তাবেজ ও অন্যান্য কাগজপত্রের
ফটোকপি চেয়ে নিতে হবে। জমির
দলিল, ওয়ারিশ সনদ (প্রযোজ্য
ক্ষেত্রে), সিএস/ এসএ/ আরএস/
মহানগর/ মিউটেশন পরচা, ডিসিআর,
খাজনার দাখিলা ইত্যাদির
ফটোকপি সংগ্রহের
চেষ্টা করতে হবে। বিক্রেতা এসব
কাগজপত্র
দিতে গড়িমসি করলে তাকে যতদূর
সম্ভব চাপ দিতে হবে। সংগৃহীত
কাগজপত্র নিয়ে সরাসরি তহশীল
বা ভূমি অফিসে যেতে হবে। উক্ত
অফিসে কর্মরত কাউকে কাগজপত্র
গুলো যাচাইয়ের জন্য
সহায়তা করতে অনুরোধ করতে পারেন।
কোন জমির প্রকৃত
অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য
কেবলমাত্র তহশীল অফিস থেকেই
পেতে পারেন। অর্থাৎ খাজনার
রশিদটি সঠিক কি না, প্রস্তাবিত
দাগ খতিয়ানের জমির প্রকৃত মালিক
কে, জমিতে কোন সরকারি স্বার্থ
(খাস, ভিপি, পরিত্যাক্ত, অধিগ্রহণ
বা এ্যাকুইজিশনকৃত, কোর্ট অব
ওয়ার্ডস, ওয়াকফ ইত্যাদি) জড়িত
কি না ইত্যাদি বিষয়ে উক্ত অফিসই
আপনাকে প্রকৃত তথ্য দিতে পারে।
৪/ এসি (ল্যান্ড) অফিস থেকে পূর্ব
মালিকের অর্থাৎ বিক্রেতার
নামে মিউটেশনের কাগজপত্র
(মিউটেশন পরচা, ডিসিআর) সঠিক
আছে কি না তা যাচাই
করে নিতে হবে।
যে জমিটি কিনতে চাচ্ছেন
তা বিক্রেতার নামে অবশ্যই
মিউটেশন করা থাকতে হবে।
বিক্রেতার নামে মিউটেশন
না থাকলে জমি রেজিস্ট্রেশন
হবে না।
৫/ জমিটির কাগজপত্র
যাচাইয়ে সন্তুষ্ট হয়ে কেনার
বিষয়ে মনস্থির
করলে বা বায়না করলে আপনার নাম,
ঠিকানা, জমির দাগ-খতিয়ান উল্লেখ
করে জমিতে একটি সাইনবোর্ড দিন।
একইসাথে পত্রিকায় ছোট আকারের
হলেও একটি বিজ্ঞাপন দিন।
এতে পরে কোন সমস্যা হলেও
আপনি আইনগত সুবিধা পাবেন।
তাছাড়া, এই জমির অন্য কোন
দাবীদার বা ওয়ারিশ থাকলে,
মামলা মোকদ্দমাসহ অন্য কোন
সমস্যা থাকলে তা প্রকাশিত
হবে এবং আপনি ভবিষ্যতের
একটি স্থায়ী ও জটিল
সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন।
প্রয়োজনে এবং অবস্থা বুঝে আপনার
জমি কেনার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন
করুন।
৬/ আর্থিক লেনদেনের
ক্ষেত্রে রশিদ নেওয়ার
এবং সাক্ষী রাখার চেষ্টা করবেন।
যতটা সম্ভব চেক বা ব্যাংকের
মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন
করবেন।
৭/ জমি কেনার
ক্ষেত্রে সরাসরি জমির প্রকৃত
মালিকের সাথেই
আলোচনা করা উচিৎ।
মধ্যস্বত্ত্বভোগী বা ভায়া মিডিয়
মাধ্যমে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের
আলোচনা যতটা সম্ভব
এড়িয়ে যাওয়া ভাল। এতে যেমন জমির
নিষ্কন্টকতার
বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্ত
হতে পারেন, তেমনি দাম-দরের
ক্ষেত্রেও প্রতারণার শিকার
হতে পারেন।
মনে রাখবেন, জমি কেনার সময় কখনই
তাড়াহুড়ো করবেন না। কম
দামে কেনার
আকর্ষণে ভালভাবে যাচাই
না করে জমি কিনতে গিয়ে নিঃশেষ
হয়ে যেতে পারেন।

Comments

Popular posts from this blog

জেনে নিন ভায়োলেশন কেইস সম্পর্কে

** 'হেবা' ও 'হেবা-বিল-এওয়াজ' কী? **

শোন এরেস্ট (Shown Arrest) কাকে বলে ? ..শিশুদের গ্রেপ্তারে হাতকড়া পরানো যাবেনা